ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কুতুবদিয়ায় নুরানীয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় গোপনে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের পায়ঁতারা!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া ::

কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল জামেয়া নুরানীয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার জাকের হোছাইনের বিরুদ্ধে অখ্যাত পত্রিকায় গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিন পদে ‘পছন্দের’ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সুপারের পছন্দের কয়েকজন প্রার্থীকে ওই তিন পদে নিয়োগ পাইয়ে দিতে অখ্যাত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গোপনে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ চেষ্টা করায় সুপার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়া দ্বীপজুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে চাকুরী প্রার্থী ও স্থানীয় জনমনে চরম বিভ্রান্তি এবং ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। অখ্যাত পত্রিকায় একেক সময় একেক ধরনের গলাকাটা ফি নির্ধারণ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কারণে এবং পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহ করতে না পারায় অনেক যোগ্য ও মেধাবী চাকুরী প্রার্থী যথাসময়ে আবেদন করতে পারেনি। চাকুরী প্রার্থীরা অখ্যাত পত্রিকায় মাদ্রাসা সুপারের দেওয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে প্রচার বহুল পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে জনবল নিয়োগদানের জন্য মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার, কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জরুরী হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩ইংরেজীর ১৩অক্টোবর ঢাকার একটি অখ্যাত দৈনিক পত্রিকায় কুতুবদিয়ার কৈয়ারবিল জামেয়া নুরানীয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার জাকের হোছাইন তার মাদ্রাসায় সহ-সুপার, ইবতেদায়ী প্রধান ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়। সেখানে সহ-সুপার ও ইবতেদায়ী প্রধান পদে আবেদনের সাথে ফি চাওয়া হয়েছে ১২শত টাকা। আর নিরাপত্তfকর্মী পদে আবেদনের সাথে ফি চাওয়া হয়েছে ৬শত টাকা। এরপর কক্সবাজার জেলার একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় একই মাসের ৩ অক্টোবর একই বিজ্ঞপ্তি দেয় সুপার। সেখানে সহ-সুপার ও ইবতেদায়ী প্রধান পদে আবেদনের সাথে চাকুরী প্রার্থীদের কাছ থেকে ফি চেয়েছেন ১হাজার টাকা ও নিরাপত্তাকর্মী পদে ফি চেয়েছেন ৫শত টাকা। দুইটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুই ধরনের ফি চাওয়ায় চরম বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে জানতে মাদ্রাসার সুপার জাকের হোছাইনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে দুইটি পত্রিকায় দুই ধরনের ফি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন মর্মে স্বীকার করেছেন। পরে সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই রকম ফি উল্লেখ করেছেন কিনা জানতে চাইলে সুপার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

তবে উক্ত মাদ্রাসা গভার্নিং বডির সভাপতি কাজী আবদুল্লাহ আল মামুন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক ঢাকার একটি জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর। আর ১৪ অক্টোবর কক্সবাজারের একটি স্থানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। দুইটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিতে চাকুরী প্রার্থীদের কাছ থেকে একই ধরনের ফি চাওয়া হয়েছে।

তবে ৩ অক্টোবর কক্সবাজারের একটি পত্রিকায় মাদ্রাসার নামে যে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়েছে সেটি আমারা দিইনি। কে বা কারা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিটি দিয়েছে আমরা জানিনা। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি না দিলে ৩ অক্টোবর স্থানীয় পত্রিকায় কিভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এবং ওই বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে স্থানীয় পত্রিকার কাছে আপত্তি বা প্রতিবাদ জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সভাপতি বলেন, যেহেতু আমরা বিজ্ঞপ্তিটি দিইনি তাই প্রতিবাদ বা আপত্তিও জানায়নি এবং সে বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কেউ আবেদনও করেনি।

পাঠকের মতামত: